প্রতিবাদ আর বাস্তবতাকে সবাই তুলে ধরতে পারেনা। আমরা সবাই যেটাকে অন্যায় মানি সেটাকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার সাহস আমাদের সবার নেই। কিন্তু সবার মাঝে এমন কিছু মানুষ পৃথিবীতে আসেন যারা সমাজের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান স্বকীয় ভঙ্ঘিতে , কেউ তার লিখা দিয়ে, কেউ গান দিয়ে কেউ অভিনয় দিয়ে ,অর্থাৎ যার যে বিষয়ে দক্ষতা আছে সেটাকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে......
সমাজের অবহেলিত মানুষের কথা যার গানে শোভা পেয়েছিল এমন একজন হলেন বব মার্লে......
আজ তার জীবনী সম্পরকে সংক্ষেপে আলোকপাত করা হল
জ্যামাইকার কুখ্যাত একটি শহরতলির বস্তিতে ১৯৪৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন মার্লে। তার জন্মের সময় জ্যামাইকা ছিল একটি অশান্ত দেশ। রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই অস্থিরতা চলছিল দেশটিতে। শ্বেতাঙ্গ-কৃষ্ণাঙ্গ বিভেদের কারণে সংঘাতও ছিল নিয়মিত ঘটনা। কৃষ্ণাঙ্গ মা ও শ্বেতাঙ্গ বাবার কারণে ছোটবেলা থেকেই সাদা-কালো দ্বন্দ্বে ভুগতেন তিনি।

সুবিন্যস্ত জটাধারী চুলের মার্লে সবসময় মানবতার পক্ষে গান গাইতেন। তাই তার অবস্থান ছিল কৃষ্ণাঙ্গদের পক্ষে। ‘নিপীড়িত আর খেটে খাওয়া মানুষের জন্য গান করতেন তিনি। সবাইকে বলতেন একত্র হতে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকতে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কালোদের ওপর চলতে থাকা বর্ণবাদী নির্যাতনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন তার গানের মাধ্যমে। রাজনৈতিক আগ্রাসনের প্রতিবাদও করেছেন মার্লে গানের মাধ্যমে। অধিকারবঞ্চিত মানুষের পক্ষ নিয়ে তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করতেন তাঁর গানের মাধ্যমে। নিজ দেশের রাজনৈতিক সংঘাত মেটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। শান্তির জন্য কয়েকটি কনসার্ট করেছেন তিনি জ্যামাইকায়। এ সব কনসার্টের মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের এক মঞ্চে আনার চেষ্টা করতেন। বব মার্লে তাঁর পুরো ক্যারিয়ারেই যুক্ত ছিলেন রাসটাফারি আন্দোলনের সঙ্গে। জীবনঘনিষ্ঠ গান গাইতেন বলেই বিশ্বজুড়ে মার্লের বিপুল জনপ্রিয়তা তৈরি হয়। ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে অনেক কনসার্টে গান গেয়েছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে তাঁর 'বব মার্লে এন্ড দ্য ওয়েইলার্স' অ্যালবামকে 'বিশ শতকের সেরা অ্যালবাম' নির্বাচিত করে টাইম ম্যাগাজিন।

মাত্র ১৮ বছর বয়সেই কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে ব্যান্ডদল গঠন করেছিলেন মার্লে। এরপর কখনো দলের হয়ে আবার কখনো এককভাবেই গানের অ্যালবাম বের করেছেন। একাধারে গীতিকার, সুরকার, গায়ক ও গিটারবাদক ছিলেন
ফুসফুস ও মস্তিষ্কের ক্যান্সারের কারণে ক্ষন জন্মা এ শিল্পী মাত্র ১৮ বছরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ১৯৮১ সালের ১১ মে তাঁর মৃত্যু হয়।
দৈহিক মৃত্যু হলেও তার গান আর দর্শনে নিপিড়িত মানুষের বুকে অমর এ শিল্পীকে স্রদ্ধাভরে স্মরন করছি।
No comments:
Post a Comment